সোমবার, রাত ১:১৮, ১৫ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঢাকার বায়ুদূষণ: কীভাবে সতর্ক থাকবেন

দিন দিন ঢাকার বায়ুর মান খারাপ হচ্ছে, যা নাগরিকদের স্বাস্থ্যের জন্য বড় উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ক্ষতিকর কণার কারণে শ্বাসনালি এবং ফুসফুসের কোষ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়, যার ফলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায় এবং সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়ে যায়।

দীর্ঘমেয়াদে, অনেকেই শ্বাসকষ্ট, ক্রমাগত কাশি, এবং অ্যাজমার মতো দীর্ঘস্থায়ী সমস্যায় ভুগছেন। বিশেষ করে যাঁরা আগে থেকেই শ্বাসজনিত সমস্যায় আক্রান্ত, তাঁদের জন্য বায়ুদূষণ আরও ক্ষতিকর। তাই এই সমস্যার হাত থেকে রক্ষা পাওয়া প্রত্যেকের জন্য অত্যন্ত জরুরি।

পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. সাইফ হোসেন খান কিছু কার্যকরী পরামর্শ দিয়েছেন, যা বায়ুদূষণের প্রভাব থেকে রক্ষা পেতে সাহায্য করবে।


ঘরের ভিতর নিরাপদ থাকতে যা করবেন

১. দরজা-জানালা ব্যবস্থাপনা

  • বায়ুদূষণের মাত্রা বেশি থাকলে দরজা-জানালা বন্ধ রাখুন।
  • মশা নিধনের সময় জানালা-দরজা বন্ধ রাখুন।
  • অন্য সময়ে ঘরে বাতাস চলাচলের জন্য জানালা খুলে রাখুন।
  • রান্নার সময় রান্নাঘরের জানালা খোলা রাখুন।

২. দূষণ নিয়ন্ত্রণে অভ্যাস পরিবর্তন করুন

  • রান্নার জন্য চুলা যত কম সময় জ্বালাবেন, তত ভালো।
  • কৃত্রিম সুগন্ধি এবং মশার কয়েল ব্যবহার কমিয়ে দিন।
  • ঘর, বারান্দা এবং আশপাশে গাছ লাগান।

৩. পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখুন

  • বিছানার চাদর, সোফা, কার্পেট, পাপোশ ইত্যাদি নিয়মিত পরিষ্কার রাখুন।
  • ঘরে বা আশপাশে বর্জ্য পোড়াবেন না।
  • ধূমপান সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করুন।

৪. নিরাপদ বাতাস নিশ্চিত করুন

  • ঘরে এয়ার পিউরিফায়ার ব্যবহার করুন।
  • বিদ্যুৎ ও গ্যাসের অপচয় বন্ধ করুন।

ঘরের বাইরে নিরাপদ থাকতে যা করবেন

১. বাইরে যাওয়ার নিয়ম

  • প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের হবেন না।
  • বাইরে গেলে মাস্ক পরুন। সুরক্ষিত থাকার জন্য কাপড়ের মাস্কও কার্যকর।
  • মাস্ক পরিষ্কার রাখুন।

২. সচেতনতার চর্চা

  • পরিবেশের ক্ষতি করে এমন কার্যক্রম, যেমন প্রকাশ্য ধূমপান, বর্জ্য পোড়ানো, এবং ফিটনেসবিহীন যানবাহন চালনা থেকে বিরত থাকুন।
  • ব্যক্তিগত গাড়ির পরিবর্তে গণপরিবহন ব্যবহারের অভ্যাস গড়ে তুলুন।

সমাজে সচেতনতা ছড়িয়ে দিন

১. প্রতিবাদ এবং সচেতনতা সৃষ্টি

  • প্রকাশ্য ধূমপানের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করুন।
  • এলাকায় বর্জ্য পোড়ানো বা ফিটনেসবিহীন যানবাহনের ব্যাপারে কর্তৃপক্ষকে অবহিত করুন।

২. সবুজায়ন এবং পরিবেশ রক্ষা

  • এলাকায় বেশি বেশি গাছ লাগানোর উদ্যোগ নিন।
  • পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখতে উদ্ভিদ ও প্রাণীর প্রতি সংবেদনশীল আচরণ গড়ে তুলুন।

৩. বয়স্কদের সুরক্ষা

  • ৬৫ বছরের বেশি বয়সীদের জন্য নিউমোনিয়া ও ইনফ্লুয়েঞ্জার টিকা নিশ্চিত করুন।

বায়ুদূষণের ক্ষতিকর প্রভাব এড়াতে নিজেরা সচেতন হন এবং অন্যদের সচেতন হতে উৎসাহিত করুন। সব মিলিয়ে সম্মিলিত উদ্যোগই বায়ুদূষণের এই সমস্যা মোকাবিলায় সাহায্য করতে পারে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top