শনিবার, সন্ধ্যা ৬:২০, ১৬ই ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শনিবার, সন্ধ্যা ৬:২০, ১৬ই ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

২২টি স্কুল ফিরিয়ে দিয়েছিল, তাই সন্তানের জন্য নিজেই গড়লেন বিশেষ স্কুল

এক নারী তার অটিস্টিক সন্তানকে ভর্তি করার জন্য এক স্কুল থেকে আরেক স্কুলে ঘুরে বেড়িয়েছিলেন, কিন্তু কোথাও তাকে আশার বাণী শোনানো হয়নি। একে একে ২২টি স্কুল তাকে ফিরিয়ে দেয়। অবশেষে, সেই নারী নিজের সন্তানের মতো বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের জন্য একটি স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন, যাতে আর কারো এমন অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হতে না হয়।

সিরিয়ার রানা আক্কাদ, যিনি বর্তমানে দুবাইয়ে বসবাস করেন, গালফ নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, “আমার ছেলে, জাদ আতাসিকে ২২টি স্কুল থেকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। আমি সস্তা, নামীদামি, নিম্নমানের সব ধরনের স্কুলে চেষ্টা করেছি। এমনকি তাকে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের জন্য তৈরি সেন্টারে রাখার চেষ্টা করেছিলাম, কিন্তু সেখানে সে শারীরিকভাবে অনেক পিছিয়ে পড়ছিল। তার কথা বলার এবং আচরণের কিছু সমস্যা ছিল, তবে শারীরিক অক্ষমতা ছিল না।”

২২ বছর আগে দুবাইয়ে আসা রানা বলেন, যখন তার ছেলে দেড় বছর বয়সী ছিল, তখন তিনি লক্ষ্য করেছিলেন যে জাদ কারো সঙ্গে মেশে না, চোখের দিকে তাকায় না, এবং কিছু কিছু শব্দ বলতে পারলেও ধীরে ধীরে তা বন্ধ হয়ে যায়। তার চোখে আনন্দের ঝলক আবার ফিরেছিল যখন তিনি বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের জন্য একটি সেন্টার প্রতিষ্ঠা করেন। তবে দুঃখজনকভাবে দুই বছর পর, জাদ মারা যায়। তার বয়স তখন ১১ বছর ছিল।

ছেলের মৃত্যুর পর রানা বলেন, “জাদ অটিজমে আক্রান্ত হয়েছে, তা ধীরে ধীরে আমরা বুঝতে পারলেও ক্লিনিক্যালি তার পরে নিশ্চিত করা হয়েছিল। তবে তাকে স্কুলে ভর্তি করানো ছিল এক কঠিন সংগ্রাম। ২২টি স্কুল থেকে প্রত্যাখ্যাত হওয়ার পর, এক স্কুলে ভর্তির সুযোগ পেলেও সেখানে তার জন্য অন্য সংগ্রাম শুরু হয়।”

রানা জানান, যে স্কুলে জাদ ভর্তি হয়েছিল, সেটি কয়েক বছর পর বন্ধ হয়ে যায়। তিনি সেই স্কুলের অভিজ্ঞতা অন্যদের সঙ্গে শেয়ার করতেন। একদিন, স্কুল থেকে ফিরতে গিয়ে রানা লক্ষ্য করেন, তার ছেলে বন্ধুদের সঙ্গে মিশতে পারছে না। বন্ধুদের একটি গাড়িতে করে অন্য কোথাও যাওয়ার দৃশ্য দেখে তার চোখে যে কষ্ট তিনি দেখেছিলেন, তা অনুভব করে রানা ঠিক করেন, তাকে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের জন্য কিছু করতে হবে।

Scroll to Top