সদর উদ্দিন আহমদ চিশতী
(বাকারা)=বে অর্থ সহিত, ক্বাফ অর্থ মহাশক্তি, রে অর্থ রাজী। সুতরাং বাকারা অর্থ মহাশক্তির সহিত যে রাজী হইয়া আছে। সম্যকগুরু একজন শিষ্যের সম্মুখে মহাশক্তিরূপে বিরাজমান । গুরু হইতে সেই শক্তি অর্জন করা বিষয়ে যে শিষ্য রাজী হইয়া থাকে তাহাকেই শুধু কোরবানী করা যাইতে পারে, অর্থাৎ সত্যের সেবায় নিয়ােজিত করিবার যােগ্য করিয়া গড়িয়া তােলা যাইতে পারে। যে সাধক সত্য লাভের জন্য উদগ্রীব হইয়া আছে তাহাকেই কেবল জবেহ করা যায়। এই অর্থেই মুসা নবী বারংবার একজন শিষ্যকেই একটি গাভী (বাকারা)। বালতেছেন। এই গাভী অবশ্য একজন যুবক, যে এখনও বীর্যপাত করে নাই এবং সংসারের ঘানি টানে নাই, তাই সে সবার আকর্ষণীয়। মুসা নবী তাঁহার কাওমের স্বার্থে শিষ্যগণকে বলিলেন যে, আল্লাহ একটি বাকারা জবেহ করিতে আদেশ করিতেছেন তখন শিষ্যবর্গ ইহাকে একটি উপহাস বাক্যরূপে গ্রহণ করিল । নবীর শিক্ষাপ্রাপ্ত হইয়া তাহারা ভালরূপেই জানিয়াছে যে, চতুষ্পদী পশু হত্যা করা জবেহ ক্রিয়া নয়। সুতরাং ইহা আল্লাহর আদেশও হইতে পারে না। যখন বুঝিল ইহা পরিহাস নয় তখন ‘বাকারা বা গাভী’ এই রূপক কথাদ্বারা কি বুঝাইতেছেন তাহা নবীর আপন রব হইতে জানিয়া লইয়া তাহাদিগের নিকট প্রকাশ করিতে বলিল। নবীর মধ্যে তাঁহার রব জাগ্রত, তাই আপন রবের সঙ্গে কথােপকথন হইয়া থাকে। শিষ্যগণের মধ্যে রব জাগ্রত হয় নাই, তাই তাহারা নবীর রব হইতে ইহার অর্থ জানিবার প্রার্থনা জানাইল । ব্যাখাঃ ৬৭ সূরা- বাকার, কোরান দর্শন প্রথম খণ্ড।