শনিবার, বিকাল ৫:৩১, ১৬ই ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শনিবার, বিকাল ৫:৩১, ১৬ই ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

টিভি, ফ্রিজ, আসবাব কিনতেই বেশি ঋণ করছে সাধারণ মানুষ

বাংলাদেশে বর্তমানে সাধারণ মানুষ গৃহস্থালি পণ্য কিনতে ব্যাংক থেকে সবচেয়ে বেশি ঋণ নিচ্ছে। গাড়ি, জমি বা ফ্ল্যাটের পরিবর্তে, টিভি, ফ্রিজ, আসবাবপত্রসহ নিত্যব্যবহার্য পণ্য কেনার জন্যই সবচেয়ে বেশি ভোক্তাঋণ নেয়া হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর শেষে দেশে ব্যাংকগুলো মোট ১ লাখ ৩৯ হাজার ৬১৪ কোটি টাকার ভোক্তাঋণ বিতরণ করেছে, যার মধ্যে ৩৫ হাজার ৭২০ কোটি টাকা ব্যবহার হয়েছে গৃহস্থালি সামগ্রী কেনার জন্য, যা মোট ভোক্তাঋণের সাড়ে ২৫ শতাংশ।

অর্থনীতিবিদ ও ব্যাংকারদের মতে, গত দুই বছর ধরে উচ্চ মূল্যস্ফীতি এবং মজুরি বৃদ্ধির তুলনায় দ্রব্যমূল্যের বৃদ্ধি সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা হ্রাস করেছে। এর ফলে, নিত্যপণ্যের দাম মেটানোর জন্য অনেকেই ঋণের দিকে ঝুঁকছেন। পাশাপাশি, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি আরও সংকটময় হয়ে ওঠে, যা গৃহস্থালি পণ্যের দাম বৃদ্ধি পেতে সহায়তা করেছে।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য অনুযায়ী, গত জানুয়ারিতে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ছিল ১০ দশমিক ৭২ শতাংশ এবং খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি ৯ দশমিক ৩২ শতাংশে পৌঁছেছে। সীমিত আয়ের মানুষের প্রকৃত আয় বৃদ্ধি না হওয়ার কারণে তারা ঋণের মাধ্যমে গৃহস্থালি সামগ্রী কিনতে বাধ্য হচ্ছেন।

এছাড়া, ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর শেষে প্রায় ৮ লাখ ৯৫ হাজার গ্রাহক টিভি, ফ্রিজ এবং অন্যান্য গৃহস্থালি পণ্য কিনতে ঋণ নিয়েছেন। ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এই ঋণের পরিমাণ ছিল ৩০ হাজার ২৯০ কোটি টাকা, যা বর্তমানে বেড়ে ৫ হাজার ৪৩০ কোটি টাকা হয়েছে।

এখন পর্যন্ত ব্যাংকের ভোক্তাঋণের দ্বিতীয় শীর্ষ খাত হলো ফ্ল্যাট ক্রয়, যেখানে ২৯ হাজার ৯১ কোটি টাকা ঋণ বিতরণ করা হয়েছে। গাড়ি ক্রয় এবং ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের ক্ষেত্রে যথাক্রমে ৪ হাজার ৩৩৭ কোটি এবং ১০ হাজার ৬৮৪ কোটি টাকার ঋণ দেয়া হয়েছে।

গোলাম মোয়াজ্জেম, সিপিডির গবেষণা পরিচালক, বলেন, বর্তমানে টিভি, ফ্রিজ, আসবাব—এই পণ্যগুলো মানুষের জন্য অত্যাবশ্যকীয় হয়ে উঠেছে। মধ্যবিত্ত শ্রেণির বৃদ্ধি এবং একাধিক ইলেকট্রনিক পণ্য ব্যবহারের প্রবণতা বাড়ার কারণে এসব পণ্য কিনতে ঋণের প্রতি আগ্রহ বাড়ছে। ব্যাংকগুলোও এসব পণ্য কেনার জন্য সহজ শর্তে ঋণ সুবিধা প্রদান করছে, যার ফলে ভোক্তাঋণ বৃদ্ধি পাচ্ছে।

Scroll to Top