ব্যাংকের বাইরে থাকা অর্থ আবারো ব্যাংকে জমা হতে শুরু করেছে, যার ফলে ব্যাংক আমানতের পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে। গত বছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বর—এই ৬ মাসে ব্যাংকে সাড়ে ৩৪ হাজার কোটি টাকা আমানত বেড়েছে। ডিসেম্বর শেষে দেশের ব্যাংক খাতে মোট আমানতের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৭ লাখ ৭৭ হাজার ৩১৫ কোটি টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ এক প্রতিবেদনে এই তথ্য পাওয়া গেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে জানানো হয়, দেশের ব্যাংক খাতে গত জুন শেষে মোট আমানতের পরিমাণ ছিল ১৭ লাখ ৪২ হাজার ৭৯৮ কোটি টাকা। ডিসেম্বর শেষে তা প্রায় ২ শতাংশ বা ৩৪ হাজার ৫১৭ কোটি টাকা বেড়ে দাঁড়িয়েছে। ডিসেম্বর শেষে ১৭ লাখ ৭৭ হাজার কোটি টাকার আমানতের বিপরীতে ব্যাংকগুলো বিতরণ করেছে প্রায় ১৭ লাখ ২ হাজার ৫৮৯ কোটি টাকা ঋণ। এর মানে হলো, আমানতের প্রায় ৯৬ শতাংশই ঋণ হিসেবে বিতরণ করা হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, ডিসেম্বর শেষে ব্যাংকের বাইরে মানুষের হাতে থাকা নগদ অর্থের পরিমাণও কমে এসেছে। গত বছরের জুন শেষে ব্যাংকের বাইরে থাকা নগদ টাকার পরিমাণ ছিল ২ লাখ ৯০ হাজার ৪৩৬ কোটি টাকা, যা ডিসেম্বর শেষে কমে ২ লাখ ৭৬ হাজার ৩৪১ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। এই ৬ মাসে প্রায় ১৪ হাজার কোটি টাকা ব্যাংকে ফিরে এসেছে।
ব্যাংক খাত সংশ্লিষ্টরা জানান, গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের পরবর্তী পরিস্থিতিতে ব্যাংক থেকে টাকা তুলে নেওয়ার প্রবণতা বেড়েছিল। রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর বেশ কিছু ব্যাংকের প্রকৃত অবস্থাও প্রকাশ পায়, যা অনেক গ্রাহককে আতঙ্কিত করে এবং তারা ব্যাংক থেকে টাকা তুলে নেন। তবে, ধীরে ধীরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে এবং ব্যাংক আমানতের সুদের হার বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে গ্রাহকরা তাদের হাতে থাকা অর্থ আবার ব্যাংকে জমা দিতে শুরু করেছেন, যার ফলে ব্যাংকের আমানত বাড়ছে এবং ব্যাংকের বাইরে থাকা অর্থ কমছে।