সম্পাদকীয়
আজ দোল ,আজ ফাল্গুনে জন্ম নেয়া চাঁদের পূর্নিমা, অর্থাৎ দোল পুর্নিমা। দোল পূর্নিমা বাঙালি সংস্কৃতির এক বিরাট অংশ জুড়ে রয়েছে। দোলের উৎসব হয়ে আসছে দীর্ঘ কাল থেকে, বাঙালির জীবনাচার, ঋতু পরিবর্তনের হাওয়া, বসন্তের যৌবন, গ্রীস্মের আগমন যেন একসাথে রূপবতী প্রকৃতিকে শিহরিত করে তোলে সূর্যের বিষুব রেখা অতিক্রমের শুক্লপক্ষে। দোল তাই নওরোজের আগমনী বার্তা অথবা বিদায় বার্তা পৌঁছে দেয় সাধকের সাধন-মনে।
দোল সাধকের জীবনের লক্ষ্য, সে কারণে দোলের ভাবগত অর্থ দাঁড়ায় বিষয়মুক্ত হওয়া, শিরকমুক্ত হওয়া। বিষয়রাশিমুক্ত মন ও দেহ জন্মের উপাদান শূন্য। এই স্তরের ব্যক্তিত্ত্ব অবস্হান গ্রহন করেন শূন্য জগতে, জাগতিক জগতে থেকেও তিনি জগতের অনাগরিক। তিনি মুক্তজীবনের আনন্দে আত্মহারা। শূন্যে দোল খেতে খেতে তিনি গেয়ে ওঠেন দোলের গান, ব্রজগোপী খেলে হরি, সখি বাঁধলো বাঁধলো ঝুলনিয়া, শুন্যের উপর আসন গড়ি পাতালপুরীর খবর নেয়… ইত্যাদি।
সাঁইজি দোল পূর্নিমাকে রূপক ধরে আত্মশুদ্ধির পূর্নিমার উৎসব করেছেন এবং প্রকৃতির বিজ্ঞানময় রূপান্তরকে উৎসবে টেনে এনেছেন ভাবুক মনকে ভাবের নগরে পৌঁছে দিতে, প্রেমিক মনকে প্রেমনগরে পৌঁছে দিতে, আর অসুরকে সুরের মূর্চ্ছনার কৃপাণে তুলোধুনো করতেন, কেননা অসুর সুরকে ভয় পায়। সুরের সাথে চিরকাল বিদ্বেষ অসুরের। আমারা দোলে, ফাগুনের পূর্নিমার সুরে বিমোহিত হয়ে জীবনে আত্মদর্শনের শুভ দোল পূর্নিমা ঘটাতে চাই। সবার জীবনে দোল আসুক। দোলের নিরন্তর শুভেচ্ছা।