মঙ্গলবার, বিকাল ৪:১৮, ২রা বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মঙ্গলবার, বিকাল ৪:১৮, ২রা বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আল্লাহ বস্তুগত আলো নহেন, সূরা নূরঃ৩৫

সদর উদ্দিন আহ্‌মদ চিশতী

আল্লাহ বস্তুগত আলো নহেন,

তিনি দেহ-মনের আলো। দেহ-মন বলিতে একটি জীবসত্তা বুঝায়। মানুষ নামক শ্রেষ্ঠ উন্নত জীবসত্তা আত্মশুদ্ধি দ্বারা বস্তু নিরপেক্ষ স্বর্গীয় যে নূরে নূরান্বিত বা সমুদ্ভাসিত হইয়া উঠেন তাহাই আল্লাহ।।

আল্লাহ নূরের মেশাল বা দৃষ্টান্ত হইল যেমন প্রদীপদানীর মধ্যে একটি প্রদীপ। প্রদীপটি স্বচ্ছ কাচের ভিতরে উজ্জ্বল একটি তারকার মত। আল্লাহর নূরে নূরান্বিত মানুষকে উজ্জ্বল একটি তারকার সঙ্গে তুলনা করিয়া প্রকাশ করা হইয়াছে।।

এই তারকা আল্লাহর আলো অর্জ্জন করিয়াছেন বর্ধিষ্ণু একটি জয়তুন বৃক্ষ হইতে। মানুষকে বৃক্ষ বলা হইয়াছে, পরিশুদ্ধ একজন মহাপুরুষকে জয়তুন বৃক্ষ বলা হইয়াছে। তরিকাপন্থীগণ তাহাদের ঊর্দ্ধতন পীর সাহেবগণকে ‘

শাজরা_শরীফ” অর্থাৎ শুদ্ধচিত্ত ভদ্রবৃক্ষ বলিয়া থাকেন।।

জয়তুন বৃক্ষতুল্য একজন মহাপুরুষ বর্ধিষ্ণু হইয়া থাকেন। তিনি তাঁহার আলো দান করিয়াও আরও অধিক মহাপুরুষ তৈরি করেন। জয়তুন বৃক্ষতুল্য একজন মহাপুরুষ পূর্ব্বের নয়, পশ্চিমেরও নয়। তিনি সার্ব্বজনীন সার্ব্বদেশীয়, স্থানকালে কোথাও আবদ্ধ নহেন।।

তিনি তাঁহার তৈল হইতে অর্থাৎ আলোর উৎস হইতে অবিরাম আলো দানের কৌশল গ্রহণ করেন যাহাতে আলোকিত মহাপুরুষের সংখ্যা বৃদ্ধি করিতে পারেন। তাঁহাদের এই আলোর যে ববস্তুগত আলো নয় তাহা বুঝাইবার জন্য বলা হইল, “ইহা আগুন দ্বারা প্রজ্জ্বলিত হয় না।” এই আলো হয়তো প্রেমাগ্নি দ্বারা প্রজ্জ্বলিত হইয়া থাকে। প্রজ্জ্বলিত হইলে আলোয় আলোময় হইয়া উঠে। ইহাই আল্লাহর নূর।আল্লাহ তাঁহার নূর দান করিবার জন্য তাহাদিগকেই হেদায়েত করেন যাহারা হেদায়েত পাইবার অবিরাম ইচ্ছা রাখে।।

আল্লাহর নূর বিকাশের কথা যে সকল দৃষ্টান্তদ্বারা প্রকাশ করা হইল সেইগুলি মানুষকে আঘাত দিয়া থাকে। দৃষ্টান্তগুলি মানবীয় ভাবকে বিচূর্ণ করিয়া ফেলে, এইজন্য দৃষ্টান্তগুলিকে আঘাত বলা হইয়াছে। এই আঘাত ধৈর্য্যের সহিত সহ্য করিয়া শুদ্ধিকর্ম্মে অর্থাৎ সালাত কর্ম্মে অগ্রসর হইলে নূরের সন্ধান পাওয়া যাইবে।

এবং আল্লাহর শান এতদূর অগ্রসর যে তিনি প্রতিটি বিষয়ের সহিত জ্ঞানবান থাকেন। সপ্তইন্দ্রিয়দ্বার পথে যাহা কিছু আসে তাহার একটিও অজ্ঞাতসারে মস্তিষ্কে প্রবেশ করিতে পারে না। তিনি পরিপূর্ণ ভাবে ইন্দ্রিয়জিত। এবং পরিপূর্ণ ভাবে ইন্দ্রিয়াতীত (দ্র. সূরা ২৪। নূরঃ৩৫)।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top