সিরাজগঞ্জের সলঙ্গা থানার হাটিকুমরুল রোড ও সিআরবিসি এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে একাধিক হাসপাতাল অনুমোদন ছাড়াই চালানো হচ্ছে। এসব হাসপাতাল দালালদের মাধ্যমে সহজ-সরল রোগীদের আকৃষ্ট করে চিকিৎসার নামে অবৈধভাবে অর্থ আদায় করছে।
অনভিজ্ঞ চিকিৎসকদের ভুল চিকিৎসা এবং অযৌক্তিক সিদ্ধান্তের কারণে অনেক রোগীর জীবন ঝুঁকিতে পড়ছে। সম্প্রতি হাফিজা মেমোরিয়াল হসপিটাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে এমন একটি ঘটনা ঘটেছে, যেখানে ভুল চিকিৎসার ফলে এক প্রসূতি নারী ও তার নবজাতক সন্তানের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়।
জানা যায়, রোববার সিরাজগঞ্জের সলঙ্গা থানার হাফিজা মেমোরিয়াল হাসপাতালে লতা খাতুন (৩০) নামের এক অন্তঃসত্ত্বা নারী প্রসব সংক্রান্ত পরীক্ষা করাতে যান। পরীক্ষার পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সিজারিয়ান অপারেশনের পরামর্শ দেয়। তবে তার স্বামী সিদ্দিক আলী এতে আপত্তি জানালেও হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. শারমিন আক্তার স্বর্ণা অনুমতি ছাড়াই অপারেশন করেন।
অপারেশনের পর বিকেল তিনটার দিকে নবজাতকের অবস্থা সংকটাপন্ন হলে তাকে সিরাজগঞ্জ সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। কিছুক্ষণ পর হাসপাতালে জানানো হয় যে, লতা খাতুনের অবস্থাও গুরুতর। তার পরিমাণ দ্রুত হাসপাতালে পৌঁছালে জানতে পারেন যে, লতা খাতুনকে বগুড়ায় পাঠানো হয়েছে। কিন্তু পথে, চান্দাইকোনা এলাকায় পৌঁছানোর পর তার মৃত্যু হয়।
পরিবারের সদস্যরা লাশ নিয়ে হাসপাতালে ফিরে এলে স্থানীয় কিছু রাজনৈতিক নেতা এবং ক্যাডার বাহিনী ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করে বলে অভিযোগ ওঠে।
লতা খাতুনের স্বামী সিদ্দিক আলী বলেন, “আমার স্ত্রী শুধুমাত্র সাধারণ পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে গিয়েছিল। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জোর করে অপারেশন করেছে, যার ফলস্বরূপ আমি আমার স্ত্রী ও সন্তানকে হারালাম। আমি এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।”
হাসপাতালের পরিচালক ইলিয়াস মুঠোফোনে জানান, “আমি এখন ব্যস্ত, পরে কথা বলবো,” এরপর তিনি ফোন কেটে দেন।
অন্যদিকে, অভিযুক্ত চিকিৎসক ডা. শারমিন আক্তার স্বর্ণার সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
সিরাজগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. নুরুল আমীন জানান, “এখনও কোনো অভিযোগ পাইনি। তবে অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”