ছায়ানটের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ও বর্তমান সভাপতি, সংস্কৃতিকর্মী, রবীন্দ্রগবেষক এবং সংগীতজ্ঞ সন্জীদা খাতুন পরলোক গমন করেছেন। তার বয়স হয়েছিল ৯২ বছর।
মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) বিকেল ৩টার কিছু পরে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
তার মৃত্যুতে ছায়ানট গভীর শোক প্রকাশ করেছে এবং ফেসবুক পেজে এক শোকবার্তা দিয়েছে। শোকবার্তায় বলা হয়েছে, “সংস্কৃতিকর্মী, শিল্পী, গবেষক এবং শিক্ষাবিদ ছায়ানট সভাপতি সন্জীদা খাতুন-এর প্রয়াণে ছায়ানট গভীর শোক জ্ঞাপন করছে।”
সন্জীদা খাতুন ১৯৩৩ সালের ৪ এপ্রিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা এবং জাতীয় অধ্যাপক কাজী মোতাহার হোসেনের কন্যা হিসেবে জন্মগ্রহণ করেন।
তিনি কামরুন্নেসা স্কুল, ইডেন কলেজ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং শান্তিনিকেতনের বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে স্নাতক এবং রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভের পর ১৯৭৮ সালে পিএইচডি করেন। দীর্ঘদিন অধ্যাপনার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা ভাষা ও সাহিত্য বিভাগ থেকে তিনি অবসর নেন।
বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান ‘ছায়ানট’ প্রতিষ্ঠার পেছনে তার অনন্য অবদান রয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী থাকাকালীন শুদ্ধ সংগীতের চর্চা করার পাশাপাশি ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের সময়ও তিনি সক্রিয় ছিলেন। সেই সময় সহযোদ্ধাদের কাছে তিনি ‘মিনু আপা’ নামে পরিচিত ছিলেন।
তার মৃত্যুর খবর প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন তার পুত্রবধূ ও ছায়ানটের সাধারণ সম্পাদক লাইসা আহমদ লিসা।
দীর্ঘদিন ধরে সন্জীদা খাতুন ডায়াবেটিস, নিউমোনিয়া এবং কিডনি রোগে ভুগছিলেন। লাইসা আহমদ লিসা জানান, এর আগেও তিনি একই অসুস্থতার কারণে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন।
সন্জীদা খাতুনের ছেলে পার্থ তানভীর নভেদ জানিয়েছেন, প্রয়াত সন্জীদা খাতুনের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন অনুষ্ঠান আগামীকাল বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টায় রাজধানীর ধানমন্ডির ছায়ানট সংস্কৃতি–ভবনে অনুষ্ঠিত হবে।