ফরিদপুরের সাবেক সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. আবুল কালাম আজাদের বিরুদ্ধে এক কোটি সাত লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে তিনটি মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। অভিযোগ অনুযায়ী, এতিম, প্রতিবন্ধী, বিধবা ও বয়স্ক ভাতা, পাশাপাশি সেবা অধিদপ্তরের বিভিন্ন ঋণ কর্মসূচি তহবিল থেকে এই অর্থ আত্মসাৎ করা হয়েছে।
মঙ্গলবার, দুদকের ফরিদপুর জেলা সমন্বিত কার্যালয়ের উপ-সহকারী পরিচালক মো. ইরমান আকদ বাদী হয়ে মামলাগুলো দায়ের করেন। ফরিদপুর জেলা কার্যালয়ের আরেক উপ-সহকারী পরিচালক মো. কামরুল হাসান এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। আসামি মো. আবুল কালাম আজাদ বর্তমানে কক্সবাজার জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরে প্রবেশন কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত। তিনি ২০০৮ সালের ১০ জুন থেকে ২০২৩ সালের ১২ জুলাই পর্যন্ত নগরকান্দা উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করেন।
দুদক জানিয়েছে, প্রথম মামলা করা হয় ২০১৮ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত সমাজসেবা অধিদপ্তরের বিভিন্ন ঋণ কর্মসূচি তহবিল থেকে ৩৬ লাখ ৩৫ হাজার ৬০০ টাকা উত্তোলন করে বিতরণ না করার অভিযোগে। দ্বিতীয় মামলাটি করা হয়েছে, ২০২০-২০২১ অর্থ বছরে নগরকান্দা উপজেলার নয়টি ইউনিয়ন ও পৌরসভার জন্য বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতার ৫৮ লাখ ৮৭ হাজার ৭৫০ টাকা ব্যাংক থেকে উত্তোলন করে আত্মসাৎ করার অভিযোগে। তৃতীয় মামলাটি ২০২২-২০২৩ অর্থ বছরে এতিমদের জন্য বরাদ্দ দ্বিতীয় কিস্তির ১২ লাখ ৫০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগে করা হয়েছে।
এই মামলার ঘটনায় বিস্ময় প্রকাশ করে আবুল কালাম আজাদ বলেন, “আমি জানতে চাই দুদক এসব অভিযোগ কোথা থেকে পেলো। আগে বিভাগীয় অভিযোগ উঠেছিল, তবে আমি এর দায় থেকে মুক্তি পেয়েছি।” তিনি অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “কিছুটা নয়-ছয় হয়েছে, তবে এতিমের টাকা ও প্রতিবন্ধীদের টাকা তারা পেয়েছে। এটি ইউএনও, উপজেলা চেয়ারম্যানসহ দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের সম্মতিতে এবং সম্মিলিত সিদ্ধান্তে করা হয়েছে।”
তদন্তকারী কর্মকর্তা কামরুল হাসান বলেন, “মামলা তিনটি ফরিদপুরের বিশেষ জেলা জজ আদালতে স্থানান্তর করা হয়েছে।”
আবুল কালাম আজাদ ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার ঢেউখালী ইউনিয়নের ১০ হাজার গ্রামের বাসিন্দা। বর্তমানে তিনি মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার পচ্চর ইউনিয়নের পাচ্চর মাস্টার কলনী এলাকায় বসবাস করছেন।