নিজস্ব প্রতিবেদক,
বগুড়া থেকে বয়ে আসা করতোয়া এবং যমুনার শাখা নদী বাঙালীর মিলনস্হল হচ্ছে নলকার উত্তরে, এই দুটি নদীর মিলনস্থল থেকে শুরু করে বাঘাবাড়ি পর্যন্ত প্রবাহিত নদীর নাম ফুলজোড়। অনেকে এ নদীকে করোতোয়া ফুলজোড় নামেও চিনে থাকে। দেশের অন্য অনেক নদীর মত এ নদীটিও শাসনে, শোষণে অসুস্থ হয়ে পড়েছে, হারিয়েছে উত্তাল যৌবন, এখন সে মৃতপ্রায় গাঙ। তবু নদীটি টিকে আছে, খননের কারণে গভীর হয়েছে কোথাও কোথাও। রুগ্ন বটে কিন্তু জল নিয়ে বুকে প্রবাহিত হয়ে চলেছে বাঁকে বাঁকে। বর্ষার আগমনে অনেকটা প্রাণ ফিরে পায় নদীটি, এটুকু পাওয়া আর তার স্মৃতিটুকু নিয়েই বেঁচে আছে নদীপাড়ের অনেক মানুষের ভালোবাসায়। বহুমানুষের বাড়ি ঘর, জমি জমা, বাজার, স্হাপনা ভেঙেছে ফুলজোড়। মুখে মুখে নদীভাঙা মানুষেরা গালি দিলেও প্রাণের গভীরে লুকিয়ে আছে তার প্রতি গভীর মমত্ত্ববোধ, ভালোবাসা। এ নদীই তো তাদের দিয়েছে পরিবেশের ভারসাম্য, বুক ভরে শ্বাস নেয়ার নির্মল বাতাস, গা জুড়িয়ে যাওয়া হাওয়া, নতুনের স্বপ্ন, নদীর সাথে খেলা করার আনন্দ আরও কত কি! ফুলজোড় নদীর মাছ চিরকাল গৌরবের, চিরকাল সমৃদ্ধির উপকরন। যুগ যুগ ধরে নদী পাড়ের মানুষের মাছের চাহিদা অনেকাংশে মিটাচ্ছে এ নদী।
কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয় ইদানিং এ নদীতে কতিপয় দুর্বৃত্ত ও হিংস্র প্রকৃতির মানুষেরা রাতের বেলায় ইলেকট্রিক শক দিয়ে মাছ শিকার করছে বলে খবর পাওয়া গেছে। ইলেকট্রিক শক্টের ফলে নদীতে মাছ, মাছের পোনা, জলজ প্রাণী, জলজ উদ্ভিদ ইত্যাদির ব্যাপক ক্ষতিসাধন হয়ে থাকে।
এলাকার জনগণ এ নিয়ে ভীষনভাবে উদ্ভিগ্ন। ফুলজোড় নদীতীরবর্তী বন্যাকান্দি গ্রামের ইন্জিনিয়ার এ আর মানিক জনসচেতনতামূলক একটি পোস্টও দিয়েছেন তার ফেসবুকে। ফলে সচেতনতা বৃদ্ধির একটি প্রয়াস পেয়েছে বলে অনেকে মনে করছেন। এলাকার জনগন মনে করেন জনগনকে সচেতন করার পাশাপাশি প্রশাসনের নজরদারিও জরুরি। তারা বলেন নদী বাঁচলে পরিবেশ বাঁচবে, প্রকৃতি রক্ষা পেলে জীবন রক্ষা পাবে। তারা এ হীনকর্মের শেষ দেখতে চান।