শুক্রবার, রাত ৪:৫৬, ৫ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শুক্রবার, রাত ৪:৫৬, ৫ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শেখ মুজিবকে স্বাধীনতার ঘোষক লিখে তোপের মুখে পড়েন এসিল্যান্ড

শেখ মুজিবুর রহমানকে স্বাধীনতার ঘোষক উল্লেখ করে ফেসবুকে পোস্ট দেওয়ার ঘটনায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সিরাজুম মুনিরা তোপের মুখে পড়েছেন। ফেসবুক আইডি “Acland Sorail” থেকে বুধবার সকালে পোস্টটি দেওয়ার পর এটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে এবং সরাইল উপজেলা বিএনপিসহ বিভিন্ন মহলে তোলপাড় সৃষ্টি হয়।

এ ঘটনার পর, অন্নদা উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে গিয়ে উপজেলা বিএনপির নেতাকর্মীদের তোপের মুখে পড়েন সিরাজুম মুনিরা। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হওয়ায় তিনি দ্রুত মাঠ থেকে ফিরে আসেন। পোস্ট দেওয়ার প্রায় এক ঘণ্টার মধ্যে তা মুছে ফেলা হয় এবং একটি নতুন পোস্টে দাবি করা হয়, প্রথম পোস্টটি ফেসবুক হ্যাক করে করা হয়েছে। তবে সরাইল উপজেলা বিএনপি এই দাবি ‘নাটক’ হিসেবে উল্লেখ করে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানায়।

এর পর, সরাইল উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সিরাজুম মুনিরাকে প্রাথমিকভাবে তার দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয় এবং তাকে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে সংযুক্ত করা হয়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোশারফ হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এ বিষয়ে সরাইল উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নুরুজ্জামান লস্কর তপু সাংবাদিকদের বলেন, “এসিল্যান্ড ফ্যাসিবাদের দোসর। তার ফেসবুক হ্যাক হওয়ার নাটক কাজ করবে না, তার বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নিতে হবে।”

এদিকে, সরাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোশারফ হোসেন জানান, এসিল্যান্ড সিরাজুম মুনিরা দাবি করেছেন যে, পোস্টটি তিনি লেখেননি এবং আইডির পাসওয়ার্ড অনেকের কাছে ছিল। জেলা প্রশাসক জানিয়েছেন, তাকে আপাতত দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে এবং বিষয়টি তদন্ত করা হবে।

ফেসবুক পোস্টে যা লেখা ছিল:

“পৃথিবীর বুকে বাংলার নাম আজ উজ্জ্বল, লড়াইয়ের ইতিহাসে লেখা হলো অনন্য মহিমা, সেখানে বীরত্বের গান বাজে নিঃশব্দে, শাসকগোষ্ঠীর শৃঙ্খল ভেঙে মুক্তির সীমানা। ১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ কালরাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী নির্মম গণহত্যা চালায়। সেদিন রাতেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঘোষণা করেন- বাংলাদেশ স্বাধীন! এরপর শুরু হয় আমাদের মুক্তিযুদ্ধ। দীর্ঘ ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের পর ১৬ই ডিসেম্বর বিজয় অর্জিত হয়, কিন্তু এর ভিত্তি স্থাপিত হয়েছিল ২৬শে মার্চেই। তাই এই দিনটি আমাদের স্বাধীনতার প্রতীক, সংগ্রামের চেতনা এবং আত্মত্যাগের মহিমায় উজ্জ্বল।”

“আমাদের স্বপ্ন- একটি দুর্নীতিমুক্ত, প্রযুক্তিনির্ভর, উন্নত বাংলাদেশ। যেখানে সব নাগরিকের সমান অধিকার থাকবে, শিক্ষার মান আরও উন্নত হবে, অর্থনীতি হবে স্বনির্ভর এবং সর্বোপরি-গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও ন্যায়বিচার থাকবে সুসংহত। অর্জিত স্বাধীনতা কেবল একটি ঘটনা নয়, জীবনধারার প্রাত্যহিকতায় মুক্তির আবেশ দায়িত্ব এ দেশের প্রতিটি সন্তানের কাঁধে, আগামী দিনে গড়তে হবে সোনার বাংলাদেশ। মহান স্বাধীনতা দিবসের শুভেচ্ছা…”

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top