চিকিৎসক এবং মেডিকেল শিক্ষার্থীরা আগামী বুধবার তাদের পাঁচটি দাবির জন্য সারা দেশে কর্মবিরতি পালন করবেন। এ কর্মসূচির আওতায় হাসপাতালের বহির্বিভাগ, অন্তবিভাগ এবং বৈকালিক চেম্বার বন্ধ থাকবে। তবে আইসিইউ, সিসিইউ, জরুরি বিভাগসহ অন্যান্য জরুরি সেবা চালু থাকবে। মঙ্গলবার, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এক সংবাদ সম্মেলনে ইন্টার্ন চিকিৎসক নাদিম হোসাইন এ কর্মবিরতির ঘোষণা দেন।
নাদিম হোসাইন জানান, বুধবার সারা দেশের মেডিকেল ও ডেন্টাল শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন করবেন এবং সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালের ইনডোর, আউটডোর এবং বৈকালিক চেম্বার বন্ধ থাকবে। মানবিক কারণে আইসিইউ, সিসিইউ, ক্যাজুয়ালটি, এবং লেবার রুমের কার্যক্রম চালু থাকবে।
তিনি আরও বলেন, চিকিৎসক ও মেডিকেল শিক্ষার্থীদের জন্য কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে একটি মহাসমাবেশের ডাক দেওয়া হয়েছে, যেখানে ঢাকার ও ঢাকার বাইরের শিক্ষার্থীরা সকাল ১১টায় সমবেত হয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দিকে লংমার্চ করবেন।
চিকিৎসকরা তাদের দাবির মধ্যে একটি বড় দাবি হিসেবে ম্যাটস (মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট ট্রেনিং স্কুল) শিক্ষার্থীদের নামের আগে ‘ডাক্তার’ পদবি ব্যবহারের বৈধতার জন্য আদালতে রিট আবেদন করেছেন, যার শুনানি ১২ মার্চ অনুষ্ঠিত হবে।
এছাড়া, এমবিবিএস ও বিডিএস ছাড়া অন্য কাউকে ‘ডাক্তার’ পদবি ব্যবহার করতে না দেওয়ার দাবি জানিয়ে বিভিন্ন মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন এবং অন্যান্য আন্দোলন কর্মসূচি পালন করছেন। ইন্টার্ন চিকিৎসক ও পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ট্রেইনি চিকিৎসকরাও এ আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছেন।
চিকিৎসকদের পাঁচটি দাবি হলো:
১. এমবিবিএস/বিডিএস ডিগ্রিধারী ছাড়া অন্য কেউ ‘ডাক্তার’ পদবি ব্যবহার করতে পারবে না এবং আগামী ১২ মার্চের মধ্যে আদালতে চলমান এ বিষয়ে সকল রিট আবেদনের নিষ্পত্তি করতে হবে।
২. ‘রেজিস্টার্ড চিকিৎসক (এমবিবিএস/বিডিএস) ছাড়া অন্য কেউ স্বাধীনভাবে প্রাইভেট প্র্যাকটিস করতে পারবে না’—এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করতে হবে।
৩. মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট কোর্সের কারিকুলাম পুনর্নির্ধারণ এবং মানহীন সকল ম্যাটস বন্ধে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করতে হবে।
৪. জনগণের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে শূন্য পদে চিকিৎসক নিয়োগ এবং চিকিৎসকদের বিসিএসের বয়সসীমা ৩৪ বছরে উন্নীত করতে হবে।
৫. চিকিৎসক সুরক্ষা আইন প্রণয়ন এবং বেসরকারি চিকিৎসকদের জন্য সুনির্দিষ্ট বেতন কাঠামো তৈরি করতে হবে।
এদিকে, ম্যাটস শিক্ষার্থীরা নতুন পদ সৃষ্টি, দশম গ্রেডে শুন্য পদে নিয়োগ এবং চার বছরের অ্যাকাডেমিক কোর্স বহাল রেখে কারিকুলাম সংশোধনের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। তারা ‘মেডিকেল এডুকেশন বোর্ড অব বাংলাদেশ’ গঠনের এবং আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের ভিত্তিতে উচ্চতর শিক্ষার সুযোগ চাচ্ছে।