গতকাল, ৮ এপ্রিল ২০২৫, মঙ্গলবার, জাতীয় কবিতা পরিষদের উদ্যোগে গাজায় গণহত্যা বন্ধের দাবিতে ‘প্রতিবাদ সভা ও প্রতিবাদী কবিতা পাঠ’ অনুষ্ঠিত হয়। এই প্রতিবাদ সভাটি শাহবাগের জাতীয় জাদুঘরের সামনে বিকাল ৪টায় অনুষ্ঠিত হয় এবং এর সভাপতিত্ব করেন জাতীয় কবিতা পরিষদের সভাপতি কবি মোহন রায়হান। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন সাধারণ সম্পাদক কবি রেজাউদ্দিন স্টালিন।
প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য রাখেন- বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)-র সাবেক সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, ডাকসুর সাবেক ভিপি ও নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বিশিষ্ট সাংবাদিক ও দৈনিক সমকালের উপদেষ্টা সম্পাদক আবু সাইদ খান, জাতীয় কবিতা পরিষদের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য কবি মতিন বৈরাগি, বিপ্লবী ওয়ার্কাস পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি)-র সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, ঢাবির শিক্ষক ও লেখক শাকিল সবুর, জাতীয় কবিতা পরিষদের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কবি শাহীন রেজা, সামাজিক সংগঠন বিকল্প ভাবনার সভাপতি শিক্ষাবিদ লুৎফুন নাহার খুকুমণি।
এছাড়া কবিতা পাঠ করেন গীতিকবি শহিদুল্লাহ ফরায়জী, কবি শ্যামল জাকারিয়া, কবি রফিক হাসান, কবি রফিক চৌধুরী, কবি ইউসুফ রেজা, কবি আবীর বাঙালী, কবি এবিএম সোহেল রশিদ, কবি নুরুন্নবী সোহেল, কবি আসাদ কাজল, কবি রোকন জহুর, কবি রেহানা সালাম, কবি শিমুল পারভিন, কবি নাসরিন ইসলাম শেলী, কবি জামিল জাহাঙ্গীর, কবি সবুজ মনির, কবি কাব্য রাসেলসহ দেশের প্রথিতযশা কবিগণ। অনুষ্ঠানে দেশের বিভিন্ন প্রখ্যাত কবি, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, মুক্তচিন্তার মানুষ, সাংস্কৃতিক কর্মী ও সচেতন নাগরিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
প্রতিবাদ সভায় সাবেক রাজনীতিবিদ মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, “সাম্রাজ্যবাদ টিকিয়ে রাখতে বিশ্ব-মোড়ল আমেরিকার মদদে স্বাধীন ফিলিস্তিনের জনগণের উপর এই বর্বরোচিত হামলা ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। তখন ইয়াহিয়ার মদদে বাঙালিদের হত্যার মতো আজও গাজায় গণহত্যা চালানো হচ্ছে। আমরা বিশ্ববাসীকে এই গণহত্যার বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানাই।”
মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, “বাংলাদেশের জনগণ মেজর জলিলের নেতৃত্বে যেমন ফিলিস্তিনের জনগণের জান-মাল রক্ষায় সরাসরি যুদ্ধে গিয়েছিল এবং শহীদ হয়েছিল, প্রয়োজনে তেমনিভাবে আমরা আবারও যুদ্ধে যাবো।” তিনি আরও বলেন, “জাতীয় কবিতা পরিষদ সবসময় যুগোপযোগী পদক্ষেপ গ্রহণ করে এবং তাদের আজকের এই উদ্যোগ প্রশংসনীয়।”
সাংবাদিক আবু সাইদ খান বলেন, “গাজায় গণহত্যার বিরুদ্ধে বিশ্ববাসীকে ঐক্যবদ্ধ হতেই হবে। নাহলে সাম্রাজ্যবাদের এই যুদ্ধযুদ্ধ খেলা আর ধ্বংসযজ্ঞ বন্ধ হবে না।”
সাইফুল হক বলেন, “আজ হোক, কাল হোক, মানবতা বিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত নেতানিয়াহুকে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হবে। তার বিচার হবেই।”
শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন বলেন, “বাংলাদেশের সংগ্রামী মানুষ ফিলিস্তিনের মুক্তিকামী মানুষের পাশে সবসময় ছিল এবং থাকবে।”
সভাপতির বক্তব্যে কবি মোহন রায়হান বলেন, “ফিলিস্তিনিদের পক্ষে, প্রয়োজনে, বাংলাদেশের কবিরা সরাসরি যুদ্ধে সামিল হবে।” সাধারণ সম্পাদক রেজাউদ্দিন স্টালিন বলেন, “পৃথিবীতে কবিরা সবসময় সব অনাচারের বিরুদ্ধে লড়াই করেছে। ফিলিস্তিনের গাজাবাসি সহ বিশ্বের সব নিপীড়িত মানুষের পক্ষে এবং গণহত্যার বিরুদ্ধে কবিরা সবসময় জাগ্রত থাকবে।”