বৃহস্পতিবার, সকাল ১১:২৮, ৪ঠা বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বৃহস্পতিবার, সকাল ১১:২৮, ৪ঠা বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বগুড়ায় দেড় যুগ পর বর্ষবরণে বিএনপির জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজন

দীর্ঘ বিরতির পর বগুড়ায় এবার পয়লা বৈশাখে ব্যাপক উৎসব ও আনন্দঘন পরিবেশে বাংলা নববর্ষ উদ্‌যাপন করেছে বিএনপি ও এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলো। ২০০৬ সালের পর এই প্রথম তারা বর্ণাঢ্য আনন্দ শোভাযাত্রা এবং সপ্তাহব্যাপী বৈশাখী মেলার আয়োজন করে। শোভাযাত্রায় অংশ নেয় হাতি, ঘোড়া, টমটম, পালকি, ঢেঁকি, কাস্তে, মাছ ধরার জালসহ বাংলার চিরায়ত লোকজ ঐতিহ্যের নানা উপকরণ। ঢোল, বাঁশি ও নানা বাদ্যযন্ত্রের সুরে সুরে নেচে-গেয়ে নববর্ষকে বরণ করে নেয় নেতাকর্মীরা।

সকালে বর্ষবরণ উপলক্ষে বগুড়া জেলা প্রশাসন, সরকারি আজিজুল হক কলেজ, বগুড়া জিলা স্কুল, সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়, বিয়াম মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ এবং পুলিশ লাইনস স্কুল অ্যান্ড কলেজ আলাদাভাবে আনন্দ শোভাযাত্রা বের করে। অন্যান্য বছরের মতো এবার ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’ নয়, বরং ‘বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা’ শিরোনামে এই আয়োজন অনুষ্ঠিত হয়। এতে নেতৃত্ব দেন বগুড়ার জেলা প্রশাসক হোসনা আফরোজা ও পুলিশ সুপার জিদান আল মুসা।

বগুড়া জেলা বিএনপির একাধিক সূত্র জানায়, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে এ বছর বর্ষবরণে দেশীয় সংস্কৃতি পুনরুজ্জীবনের লক্ষ্যে এমন জমজমাট আয়োজন করা হয়। জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক পৌর মেয়র রেজাউল করিম বাদশা এবং ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য মোশারফ হোসেনের নেতৃত্বে আয়োজিত শোভাযাত্রায় অংশ নেয় বিএনপির যুবদল, ছাত্রদল, মহিলা দল, স্বেচ্ছাসেবক দল, কৃষক দলসহ জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক সংগঠন জাসাসের নেতাকর্মীরা। শোভাযাত্রাটি সাতমাথা থেকে শুরু হয়ে আলতাফুন্নেছা খেলার মাঠ ঘুরে শহর প্রদক্ষিণ করে।

শোভাযাত্রায় ছিল লোকজ বাংলার চিত্ররূপ—হাতি, ঘোড়া, গরুর গাড়ি, পালকি, মাছ, প্যাঁচা, মোরগ, ফুল ও মুখোশের বাহারি প্রদর্শনী। পুরুষরা রঙিন পাঞ্জাবি, ফতুয়া ও লুঙিতে, আর নারীরা ও কিশোরীরা শাড়িতে সজ্জিত হয়ে শোভাযাত্রাকে করে তোলে রঙিন ও প্রাণবন্ত।

এবার বগুড়া থিয়েটারের বদলে সাত দিনের বৈশাখী মেলার আয়োজন করেছে জাসাস। শহরের এডওয়ার্ড পৌর পার্কে অনুষ্ঠিত এই মেলায় রয়েছে বাউল গান, লোকনৃত্য, পালাগান, লাঠিখেলা, সাপের খেলা, চরকি, নাগরদোলা, মোরগ লড়াইসহ বহু লোকজ আয়োজন। শিশুদের জন্য রয়েছে নৌকা, ট্রেন, খেলনা, চরকি এবং বিভিন্ন ধরনের মিষ্টি ও মিঠাইয়ের দোকান।

মেলার উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক হোসনা আফরোজা এবং পুলিশ সুপার জিদান আল মুসা। এ সময় জেলা বিএনপির সভাপতি রেজাউল করিমসহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

জানা গেছে, বগুড়ায় লোকজ সংস্কৃতির ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে বিগত ৪৩ বছর ধরে বগুড়া থিয়েটার পৌর পার্কে বৈশাখী মেলার আয়োজন করে আসছিল। তবে চলতি বছর সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক তৌফিক হাসান মামলার কারণে আত্মগোপনে থাকায় থিয়েটার মেলা আয়োজনে ব্যর্থ হয়। সেই স্থলাভিষিক্ত হয়ে জাসাস আয়োজন করে এবারের বৈশাখী মেলা।

এদিকে শহরের সাতমাথায় ‘দিনবদলের মঞ্চ’ আয়োজন করে পৃথক বর্ষবরণ অনুষ্ঠান। সকালে এর উদ্বোধন করেন বগুড়া ইয়ুথ কয়ারের প্রতিষ্ঠাতা তৌফিকুল আলম। তবে পুলিশ শুরুতে এ আয়োজনে বাধা দেয়। পাশাপাশি ইসলামবিদ্বেষী বক্তব্য না দেওয়ার বিষয়ে সতর্ক করেন বায়তুর রহমান সেন্ট্রাল মসজিদের পেশ ইমামের নেতৃত্বে আগত তৌহিদি জনতা।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top